বিয়ানীবাজার উপজেলায় ভূট্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

বিয়ানীবাজার উপজেলায় ভূট্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

দুটি পাতা, একটি কুঁড়ি ৩৬০ আউলিয়ার দেশ খ্যাত সিলেট জেলার দক্ষিণ পূর্বাংশে অবস্থিত বিয়ানীবাজার উপজেলা সুরমা, কুশিয়ারা সুনাই নদী বিধৌত প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল সম্প্রতি শস্যের নিবিড়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষকদের ভূট্টা চাষে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে নতুন ফসল হিসেবে ভূট্টার আবাদ ইতোমধ্যেই বিয়ানীবাজারের কৃষকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে 

অতিবৃষ্টিপাত এবং মাটিতে অম্লতার কারনে অঞ্চলের মানুষ লেবু জাতীয় ফসল চাষে আগ্রহী উঁচু মাঝারী উঁচু জমিতে লেবু জাতীয় ফল চাষ নিচু জমিতে ধান চাষ অঞ্চলের কৃষ্টি জমির প্রকৃত মালিকগণ প্রবাসী এবং প্রবাসী হওয়ার প্রবৃত্তি থাকায় ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষী তথা বর্গা চাষী বেশি ফলে মাঝারী উচুঁ-উচুঁ জমি আবাদে জমির প্রকৃত মালিকের অনিচ্ছা তথা সিদ্ধান্ত হীনতা বর্গাচাষীদের পুঁজির অভাবের কারনে প্রচুর জমি পতিত থাকে যার ফলে উপজেলার শস্যের নিবিড়তা মাত্র ১৮২% ইতোমধ্যে চাষাবাদের খরচ কম লাজজনক হওয়ায়  বিয়ানীবাজারের কৃষকদের মাঝে ধীরে ধীরে ভূট্টা চাষের আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে ফলে উচ্চ ফলনশীল দানাজাতীয় ফসল ভূট্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে 

বিশ^ খাদ্য শস্যের পরিসংখ্যানে ধান গমের পরেই ভূট্টার অবস্থান হলেও হেক্টর প্রতি  ভূট্টার ফলন ধান গমের থেকেও বেশি বাংলাদেশে বেলে দোয়াঁশ এটেল দোয়াঁশ মাটিতে  চাষাবাদের উপযোগী ভূট্টা ফসলটি রবি মৌসুমে (মধ্য আশি^- মধ্য অগ্রহায়ন)  খরিপ- মৌসুমে (ফাল্গুন- মধ্য চৈত্র)  চাষাবাদ উপযোগী তবে, বৈশাখ - জ্যৈষ্ঠ মাসে সিলেট অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় শুধুমাত্র রবি মৌসুমে অঞ্চলে ভূট্টা চাষ করা সুবিধাজনক গত রবি মৌসুমে বিয়ানীবাজার উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ করা হয় যার মধ্যে সুপার সাইন ২৭৬০ জাতের আবাদ বেশি হয় যার গড় ফলন হেক্টর প্রতি . মেঃ টন এর বেশি ভূট্টা চাষের উপযোগি মাটি, অনুকুল আবহাওয়া, রোগবালাই কম, সেচ শ্রমিক খরচ কম, হেক্টর প্রতি অধিক ফলন  ইত্যাদি কারনে কৃষকদের মাঝে ভূট্টা চাষের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে তবে, ঐতিহ্যগতভাবে খাদ্যাভ্যাসে ভূট্টা না থাকায় এবং উপজেলায় পোল্ট্রি ফিশ ফিডের ব্যবসা সম্প্রসারিত না হওয়ায় ভূট্টার বাজার সৃষ্টি হয়নি উৎপাদিত ভূট্টার বাজার সংযোগ করা গেলে কৃষকরা ব্যাপকভাবে লাভজনক ভূট্টা চাষে আগ্রহী হবে এবং ভবিষ্যতে ভূট্টার ব্যাপক বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে 

সঠিক পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে সম্ভাবনাকে কাজে লাগালে অঞ্চলে ভূট্টা চাষাবাদের ফলে শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে জমির সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হবে তেমনি দেশের খাদ্যে নিরাপত্তায় অবদান রাখবে তাছাড়া ভূট্টা চাষের আন্তঃপরিচর্যা, ফসল কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই, শুকানো এবং প্রক্রিয়াজাত করনের কাজে নারীদের ব্যাপকভাবে অংশগ্রহনের সুযোগ থাকায় তা নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান, নারী শ্রমের উপযোগিতার ব্যবহার নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারে উৎপাদিত ভূট্টা যেমন অন্যান্য দানা জাতীয় প্রধান ফসল (ধান গম) এর উপর চাপ কমাবে, তেমনি খাদ্য চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি পোল্ট্রি ফিশ ফিড খাতের উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়