পুষ্টি মূল্য
মিষ্টি আলু বাংলাদেশের সাধারণত গরীবের খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়। প্রতি ইউনিট জমি থেকে মিষ্টি আলু থেকেই সবচেয়ে বেশি ক্যালরি উৎপন্ন হয়ে থাকে । হলদে শাঁসযুক্ত ১৩ গ্রাম মিষ্টি আলু খেলে একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের ভিটামিন ‘এ’র চাহিদা পূরণ হয়।

ব্যবহার
প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে হালুয়া, চিপস, জ্যাম, জেলি, মিষ্টি ইত্যাদি মিষ্টি আলু থেকে তৈরি করা যায়।

উপযুক্ত জমি ও মাটি
দোঁআশ ও বেলে দোআঁশ মাটি মিষ্টি আলু চাষের জন্য উপযুক্ত। নদীর চরের বালি প্রধান মাটিতে ও মিষ্টি আলু চাষ করা যায়।

জাত পরিচিতি

 

চারা রোপণ
কার্তিক মাস (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর) মিষ্টি আলু চাষাবাদের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। লতার সংখ্যা প্রতি শতকে ২২৫ টি দরকার হয়। লতার মাথা থেকে ১ম ও ২য় খন্ড রোপণ করা উচিত। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০ সেমি এবং আলু থেকে আলুর দূরত্ব ৩০ সেমি। সমতল পদ্ধতিতে সারি তৈরি করে লাগাতে হবে যাতে ২-৩ টি গিট মাটির নিচে থাকে।

সার ব্যবস্থাপনা

ক্রম    

সারের নাম সারের পরিমাণ (গ্রাম/শতক)
১.ইউরিয়া৬০০
২.টিএসপি৫০০
৩.এমপি৭৩০
৪.গোবর৪০ কেজি

গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি এবং ইউরিয়া ও এমটি সারের এক চতুর্থাংশ বপনের সময় জমিতে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে বাকি ইউরিয়া এবং এমপি সার বপনের ৬০ দিন পর সারির পাশে প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা
জমির আর্দ্রতা উপর নির্ভর করে ২-৩ টি সেচ দিতে হবে। ইউরিয়া সার পার্শ্ব প্রয়োগের সময় ২ বার গাছের গোড়া বেঁধে দিতে হবে।

পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা
পোকার নাম: মিষ্টি আলুর উইভিল পোকা
১.    পোকা চেনার উপায়: পূর্ণ বয়স্ক উইভিল প্রায় ৬ মিমি. লম্বা এবং ১.৪ মিমি চওড়া হয়ে থাকে। এ পোকার মাথায় শুড়ের মত একটি মুখাংশ আছে। মাথা এবং শাখার উপরিভাগ গাঢ় নীল রং এর এবং চোখ ও পা উজ্জল লাল কমলা বর্ণের।
২.    ক্ষতির নমুনা: কীড়া কন্দমূলের ভিতর আঁকাবাকা সুড়ংগ করে ক্ষতি করে থাকে । উইভিল আক্রান্ত কন্দমূল খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে।
৩.    অনুকূল পরিবেশ: গ্রীষ্মকালে এ পোকার আক্রমণ বেশি দেখা যায়। আলু সংরক্ষণের সময় এর আক্রমণ বেশি দেখা যায়।
৪.    ব্যবস্থাপনা: মিষ্টি আলু গাছের গোড়ার আলুতে মাটি তুলে দিলে এ পোকা দমন করা যায়। আক্রান্ত মিষ্টি আলু ভাল আলুর সাথে না রাখা । মাটিতে লতা লাগানোর ৭ দিন পর থেকে ১৫ দিন পরপর মোট ৪ বার ১% হেপ্টাক্লোর অথবা ডাইএলড্রিন ওষুধ ছিটালে এ পোকা দমন করা যায়। মিষ্টি আলু সংরক্ষণের সময় উইভিল আক্রমণযুক্ত কন্দমূল শুকনা বালি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। মেঝেতে প্রথমে ১০ সেমি. পুরু একটি শুকনা বালির স্তর সাজাতে হবে। মিষ্টি আলুর উপরে আবার ১০ সেমি পুরু স্তর ঢেকে দিতে হবে।

ফসল সংগ্রহ:  চারা রোপণের ১৩০-১৫০ দিনের ভেতর মিষ্টি আলু উঠানো যায়।