ফুলতলায় ড্রাগন ও খুরমা খেজুর চাষে আকরাম গাজীর সাফল্য

ফুলতলায় ড্রাগন ও খুরমা খেজুর চাষে আকরাম গাজীর সাফল্য

    বিদেশী প্রজাপতির দূর্লভ ফল ড্রাগন, পাম্প এবং খেজুর চাষে সফলতা পেয়েছে আকরাম গাজী নামে এক চাষী। আর বিরল এ ঘটনা ঘটেছে খুলনার ফুলতলার গাড়াখোলা গ্রামে। সে ওই গ্রামের মৃত মোবারক গাজীর ছেলে।
আকরাম গাজীর বাড়ির আঙ্গিনায় ৫৫ শতক জমির উপর গড়ে তুলেছে তার ড্রাগন, পাম্প ও খেজুর চাষ। অপরুপ সুন্দর লতানো গাছে কাঁচা পাকা ড্রাগন ফলের সমারোহ। এ ফল দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি মজাদার। নাইট-কুইন ফুলের মতো মধ্যরাতে এ ফলের ফুল ফোটে। সকাল হওয়ার আগেই তা ফলে রুপান্তরিত হয়। তাই সচরাচর ড্রাগন ফলের ফুল দেখার সৌভাগ্য হয় না অনেকের।
২০১২ সালে প্রথমে আকরাম গাজী শখের বসে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩ শত টাকা দিয়ে ১ টি ড্রাগন ফলের চারা কিনে আনেন। পরে খুলনার দৌলতপুর হর্টিকালচার সেন্টার থেকে আরও ৮ প্রজাতির এ ফলের চারা ক্রয় করেন।
এদিকে ফুলতলার বেজেরডাঙ্গাস্থ নার্সারী থেকে ৭ টি পাম্প গাছের চারা কিনে আনেন। এর মধ্যে ২ টি গাছে ফল ধরেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা বাজারজাতকরণ করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে ২০০৫ সালে সৌদি আরব থেকে বীজ এনে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তিনি চারা উৎপাদন করেন এবং বর্তমানে সেখানে ৩২ টি খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১ টি গাছে ফলও ধরেছে। এছাড়া সেখানে আনুমানিক ২০০ টি চারাও রয়েছে। তার সংগ্রহে বিরল প্রজাতির আগর ও শ্বেত চন্দন গাছ, ভারতীয় আমের চারাও রয়েছে। আগর গাছ দিয়ে দামি পারফিউম তৈরী হয়। তার বাড়িতে মুরগী ও রাঁজহাসের খামারও রয়েছে।
দূর্লভ প্রজাতির এ চাষ শখের হলেও আকরাম গাজী এর মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ফিরিয়ে এনেছে। সে গত বছর সৌদি খেজুরের চারা বিক্রি করে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ করেছে।
সৌদি খেজুরের ১ টি চারা ৪-৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সরাসরি অফসুড খেজুরের চারা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। অপরদিকে এক টুকরো ড্রাগন ফল গাছের কাটিং বিক্রি হয় ১’শ টাকা। তিনি ড্রাগন গাছের কাটিং থেকে এ বছর আনুমানিক ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। আরও প্রায় ৬০ টি কাটিং রয়েছে যার মূল্য ৬ হাজার টাকা। এছাড়া ১ কেজি ড্রাগন ফল ৩’শ থেকে ৫০০’শ টাকায় বিক্রি হয়।

চাষী আকরাম গাজী জানান, আমি শখের বশে ড্রাগন ফল ও খুরমা খেজুরের চারা আনলেও এখন আমি এটাকে বানিজ্যিকভাবে নিয়েছি। গত বছর আমি এখান থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করেছি। এছাড়া আমি রাসায়নিক সার ব্যবহারের পরিবর্তে নিজের তৈরী কম্পোজ ও জৈব সার ব্যবহার করি।