বদলগাছীতে যন্ত্রের সাহায্যে রোপণ মাড়াই

বদলগাছীতে যন্ত্রের সাহায্যে রোপণ মাড়াই

সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তন হয় অনেক কিছুই। সেই সঙ্গে হারিয়ে যায় কিছু ঐতিহ্য জিনিস। বর্তমান ডিজিটাল যান্ত্রিক যুগে পরিবর্তন এসেছে অনেক কিছুতেই। আর এ পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় কৃষিও বাদ পড়েনি । প্রযুক্তির কল্যাণে কাঠের লাঙলের জায়গায় এখন স্থান করে নিয়েছে ‘কলের লাঙল’। কেবল জমি চাষই নয়, ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে জমিতে নিড়ানি, সার দেওয়া, কীটনাশক ছিটানো, ধান কাটা, মাড়াইসহ শুকানোর কাজও হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে।

সময় পরির্বতনের সাথে সাথে পালাক্রমে গ্রাম বাংলার কৃষকের ঘরে ঘরে থাকা লাঙল-জোয়াল, মই ও হালের গরু আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

জানা যায়, আশির দশকের ঊষালগ্ন থেকে দেশের কৃষি কাজে ধীরে ধীরে আধুনিক সব যন্ত্রপাতির ব্যবহার শুরু হয়। বর্তমানে কৃষি কাজে প্রায় ৩০ প্রকারের আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী।

আর এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে অন্যতম কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার। এ যন্ত্রের মাধ্যমে ফসল কাটা, খোসা হতে ফসলের দানা আলাদা করার কাজ করা হয়। এছাড়া জমি চাষের জন্য পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর বা হুইল ট্রাক্টর, সার প্রয়োগ ও কীটনাশক ছিটানোর জন্য ব্রডকাস্ট সিডার, বীজ বপণের জন্য সিড ড্রিল, ধান/বীজ শুকানোর যন্ত্র ড্রায়ার, ধান, গম, ভুট্টা শুকানোর যন্ত্র ব্যাচ ড্রায়ার, শস্য কাটার যন্ত্র পাওয়ার রিপার মেশিন, ঝাড়ার যন্ত্র ইউনারসহ নানান যন্ত্রপাতি কৃষি কাজকে সহজ করে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।


আর এ উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখতে বর্তমানে দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশেই শুরু হয়েছে পাওয়ার টিলার, পাওয়ার রিপার, ইউনার, ইউডারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি কাজ। এ উন্নতির কারণে উপকৃত হচ্ছেন এদেশের কৃষকরা।

এ ব্যপারে স্থানীয় একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এক সময় চাষাবাদের প্রধান উপকরণ ছিল কাঠের লাঙল-জোয়াল। এতে সময় ও খরচ উভয় বেশি হতো। এখন প্রযুক্তির মাধ্যমে তা অনেক কমে এসেছে। আগে কৃষাণ দিয়ে এক বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ হতো ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। আর আধুনিক যন্ত্র রিপার দিয়ে ধান কাটতে প্রতি বিঘায় খরচ হয় ৫০০-৭০০ টাকা। এতে করে সময়ও কম লাগে। ফলে সঠিক সময়ে ধান বিক্রি করে প্রত্যাশিত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে। তারা আরও জানান, গরু দিয়ে জমি চাষ করতে আগে বিঘা প্রতি ৭০০-৮০০ টাকা লাগত যা আজ পাওয়ার টিলারের মাধ্যমে চাষ করে খরচ হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা। তাই সময় ও খরচ কম হওয়ায় আধুনিক এসব যন্ত্র ব্যবহারের দিকেই ঝুঁকছেন কৃষকরা।