বাংলাদেশে কাসাভা চাষের সম্ভাবনা  কেমন? 

উত্তর সমূহ

  1. কল্পনা রহমান, উপজেলা কৃষি অফিসার, পটিয়া, চট্টগ্রাম

    বাংলাদেশে ৮-১০ বছর আগে এ কাসাভা চাষ শুরু হলেও এটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে খুব দ্রুত। বর্তমানে দেশে প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে কাসাভা আবাদ হয়। পাহাড়ি এলাকায় কাসাভা আবাদ বেশি হচ্ছে। ফসলটির চাষ তুলনামূলকভাবে সহজ ও লাভজনক। সীমিত পরিচর্যা ও খরচে সমতল, পাহাড়ি, অনাবাদি ও অপেক্ষাকৃত কম উর্বর জমিতে এটি চাষ করা যায়। সাধারণত গাছ লাগানোর এক বছর পর এর ফলন পাওয়া যায়। কাসাভার চারা রোপণ এবং ফসল তোলার উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর। এতে তেমন কোনো সার প্রয়োগ করতে হয় না। তবে বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য হেক্টরপ্রতি ১৮০-২০০ কেজি নাইট্রোজেন, ১৫-২২ কেজি ফসফরাস ও ১৪০-১৬০ কেজি পটাশিয়াম প্রয়োগ করলে সর্বাধিক ফলন পাওয়া যায়। কাসাভা চাষে সাধারণত সেচের প্রয়োজন হয় না। দীর্ঘদিন খরা অবস্থা বিরাজ করলে হালকা সেচের ব্যবস্থা করা হলে ফলন বৃদ্ধি পায়। চারা গজানোর পর তিন মাস অন্তর গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করে গোড়ায় মাটি তুলে দিলে ফলন বৃদ্ধি পায়। গাছের উচ্চতা ৫ থেকে ৯ ফুট পর্যন্ত হয়। প্রতি একর জমি থেকে ছয়-সাত টন কাসাভা পাওয়া যায়। এর পাতা ও অবশিষ্ট অংশ জমিতে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

  2. মোঃ জসিম উদ্দিন, উপজেলা কৃষি অফিসার, খালিয়াজুরী, নেত্রকোণা

    • কাসাভা অনেকের কাছে এই নামটি অপরিচিত হলেও ‘শিমুল আলু’ বললে বেশ পরিচিত মনে হয়। দেশের পাহাড়ী অঞ্চলে বহু বছর ধরে অনেকটা অবহেলায় চাষ হওয়া আলু জাতীয় এই উদ্ভিদটি এখন বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় অর্থকরি ফসল। দেশের বাজারে এর প্রচুর চাহিদা ও সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ।
    • বাংলাদেশে কাসাভা চাষ নিয়ে ২০০১ সাল থেকে কাজ করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল (বিএইউ) উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলায়মান আলী ফকির। তিনি গবেষণা করে দু’টি জাত পেয়েছেন। তবে, এখনো অবমুক্ত করতে পারেননি। ভালো জাতের জন্য গবেষণা চালাচ্ছেন।
    • বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কসাভার উন্নত জাত আবিষ্কারের জন্য কাজ করছে।
    • দেশের ক্রম বর্ধমান জনগোষ্ঠির শর্করার চাহিদা পূরণে কসাভা একটি উল্লেখযোগ্য ফসল হতে পারে। কারন সে সকল পতিত জমিতে দেশে প্রচলিত শর্করা জাতীয় ফসল যেমন-ধান, গম, ভূট্টা চাষ করা সম্ভব নয়, সে সকল জমিতে কসাভা চাষ করা সম্ভব।