পোকার নাম : পাতা কাটা উইভিল
পোকা চেনার উপায় : লম্বা, ধুসর বাদামি রঙ, মুখের সামনে লম্বা শুড় দেখে চেনা যায়। বাচ্চার রঙ ময়লা সবুজ।
ক্ষতির ধরণ : এ পোকা আমগাছের
শুধু কচি পাতা কেটে ক্ষতি করে। কচি পাতার নিচের পিঠে মধ্য শিরার উভয় পাশে
স্ত্রী পোকা ডিম পাড়ে এবং পরে পাতাটির বোঁটার কাছাকাছি কেটে দেয়। ভালো করে
দেখলে কাচি দ্বারা কেউ কেটেছে বলে মনে হয়। এ পোকার আক্রমণে গাছের নতুন পাতা
ধ্বংস হয়, বেশি আক্রমণে একটি ছোট গাছ পাতাশূন্য হতে পারে।
আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়, চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কচি পাতা
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : পূর্ণ বয়স্ক , কীড়া
ব্যবস্থাপনা : গাছে কচি পাতা বের
হওয়ার সংগে সংগে ফেনিট্রথিয়ন জাতীয় কীটনাশক ( যেমন সুমিথিয়ন বা ফলিথিয়ন ২০
মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) স্প্রে করলে পোকার আক্রমণ রোধ করা
যায়। তাছাড়া কার্বারিল জাতীয় কীটনাশক (যেমন: সেভিন ৩০ গ্রাম ১০ লিটার
পানিতে মিশিয়ে) অথবা কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (যেমনঃ কেয়ার ৫০ এসপি; অথবা
সানটাপ ৫০ এসপি; অথবা ফরাটাপ ২০ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে)
১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে
হবে।
আম ফেটে যাওয়া কারন দীর্ঘ খরার পর হঠাৎ বৃষ্টি, শুষ্ক ও গরম হাওয়ার ফলে ফল ফেটে যেতে পারে। মাটিতে বোরন ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলেও ফল ফেটে যেতে পারে। রোগ-পোকার আক্রমণ ও আগাম জাতে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতিকার খরা মৌসুমে নিয়মিত সেচ দেওয়া,পর্যাপ্ত জৈব সার প্রয়োগ করা। বাগান ও গাছ পরিস্কার পরিছন্ন রাখা,বৎসরে দুইবার সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা। বর্ষার শুরুতে ও শেষে গাছের গোড়ায় ডলোচুন গাছপ্রতি ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করা। ফল মার্বেল দানার মতহলে বোরিক এসিড( লিবরেল বোরন/ সলুবোরন) ২ গ্রাম/ লিটার পানি ১৫ দিনের ব্যাবধানে ২-৩ বার স্প্রে করা। রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ প্রতিহত করা।
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন চাষবাস করতে হবে মানে গাছের নীচের লতা,পাতা, ঘাস সব
সরিয়ে দিতে হবে। পরে লাঙ্গল দিয়ে চাষ করে দিতে হবে, এতে পোঁকার শুককীট,
পিউপা, পূর্নাঙ্গ সব বেরিয়ে আসবে আর নষ্ট হবে। অ্যাজাডাইরেক্টিন ১% @১মিলি
/লিটার জলে দিয়ে ফুট স্প্রেয়ার দিয়ে স্প্রে করতে হবে। এই পোঁকার
আক্রমনের জন্যই রোগাক্রান্ত হয়। কারন পূর্নাঙ্গ পোকা যখন একটা একটা করে
ডিম পারে, সেই সময় কিছু রস বেরিয়ে আসে, ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয় আর
পচন ধরে। তাই মাঝে মধ্যে নিম ঘটিত কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। কারন পেয়ারা
কাচা, পাঁকা দু-ভাবেই খাওয়া যায়,তাই রাসায়নিক কৃষি বিষ না দেওয়াই ভালো। পেয়ারার ডিপ্লোডিয়া জনিত ফল পচা রোগ হলে দু একটি আক্রান্ত হলেই কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশক যেমন: গোল্ডাজিম
বা ব্যাভিস্টিন বা নোইন ১০ লি. পানিতে ১০গ্রাম মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ২ বার
স্প্রে করা। স্প্রে করার এক মাসের মধ্যে ফল খাওয়া যাবেনা।
সবরকম জমিতেই ঘৃতকুমারী চাষ সম্ভব; তবে দোঁ-আশ ও অল্প বালু মিশ্রিত মাটিতে
গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় । সুনিষ্কাশিত জমি যেসব জমিতে পানি জমে না এরূপ উঁচু
জমিতে ঘৃতকুমারীর চাষ করা যায়। তবে লবণাক্ত ও চরম অম্লীয় মাটিতে ভালো হয়
না। নিচু ও পানি জমা জমিতে গাছ পচে যায়। যেকোনো দোআঁশ মাটিতে চাষ ভালো হয়
তবে বেলে দোআঁশ মাটি উত্তম। এঁটেল মাটিতে চাষ না করা ভালো। ছায়া জায়গায় হবে
না, ঘৃতকুমারীর জন্য দরকার সারা দিন রোদ।
বন্যাপ্রবণ এলাকায় প্রধান জমিতে বন্যার পানি থাকলে বলান (Double transplanting) পদ্ধতিতে ধান আবাদ করা যেতে পারে।
বীজতলার চারার বয়স ৮-১০ দিন হলে আগাছা পরিস্কার করা উচিত।
মাজরা পোকা উপদ্রুত এলাকায় প্রতি ১০ শতক বীজতলাতে ৫ কেজি কারবফুরান ৩ জি বা
৬০০ গ্রাম ফোরেট ১০ জি বা ১.৫ কেজি কারটাপ ৪ জি প্রয়োগ করতে হবে।
বীজতলায় ঝলসা বা বাদামি চিটে বেশি আক্রমন দেখা দিলে প্রতি লিটার জলে ১/২ গ্রাম ট্রাইসাইক্লাজোল ৭৫ % ডব্লু. পি বা
১ মিলি আইসোপ্রোথিওলেন ৪০ % ই. সি. বা ২ মিলি কাসুগামাইসিন ৩ % এস.এল স্প্রে করার সুপারিশ করা হয়।
সিলেটের হাওড় অঞ্চলে বচরে প্রায় ৬ মাস পানি থাকে। যেহেত আখচাষ বছর ব্যাপী করতে হবে তাই উক্ত অঞ্চল আখ চাষের জন্য উপযোগী নয়।