১। পানি নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।
২। গাছের পরিত্যক্ত অংশ, আগাছা ও আশপাশের ধুতুরা জাতীয় গাছ একত্র করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।৩। প্রতি লিটার পানিতে প্রপিকোনাজলি গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।
১। সম্ভব হলে গাছের আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ
করে ধ্বংস করুন।
২। ক্ষেত পরিস্কার রাখুন এবং পানি নিস্কাষনের ভাল ব্যবস্থা রাখুন।
৩। (ম্যানকোজেব+মেটালোক্সিল) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: রিডোমিল গোল্ড ২
গ্রাম/ লিটার হারে অথবা সালফার ছত্রাক নাশক যেমন কুমুলাস ৪ গ্রাম বা গেইভেট
বা মনোভিট বা থিওভিট ২ গ্রাম অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশক
যেমন: গোল্ডাজিম ০.৫ মিলি. বা এমকোজিম বা কিউবি বা চ্যামপিয়ন ২ গ্রাম/
লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।
১. আক্রান্ত গাছ গোড়া সহ উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে। ২. আক্রান্ত গাছের তেউর
চারা হিসেবে ব্যাবহার করা যাবে না। ৩. জমি থেকে অতিরিক্ত পানি নিকাশের
ব্যবস্হা করতে হবে।
নেক ব্লাস্ট
রোগের আক্রমণ প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা যায় না। সাধারণত কৃষক যখন জমিতে নেক
ব্লাস্ট রোগের উপস্থিতি সনাক্ত করেন, তখন জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যায়।
সে সময় অনুমোদিত মাত্রায় ঔষধ প্রয়োগ করলেও রোগ দমন করা সম্ভব হয় না।
সেজন্য রোগের অনুকূল অবস্থা বিবেচনার পাশাপাশি এ রোগের জীবাণু যেহেতু দ্রুত
বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়, তাই রোগটি দমনের জন্য কৃষক ভাইদের আগাম সতর্কতামূলক
ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। যেসব জমির ধান নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত
হয়নি, অথচ উক্ত এলাকায় ব্লাস্ট রোগের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে অথবা
ইতোমধ্যেই কিছু স্পর্শকাতর আগাম জাতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে,
সেখানে ধানের শিষ বের হওয়ার সাথে সাথে অথবা ফুল আসা পর্যায়ে ছত্রাকনাশক
যেমন ট্রুপার (৫৪ গ্রাম/বিঘা) অথবা নেটিভো (৩৩ গ্রাম/বিঘা) শেষ বিকালে ৭-১০
দিন অন্তর দু’বার আগাম স্প্রে করতে হবে। ব্লাস্ট রোগের প্রাথমিক অবস্থায়
জমিতে পানি ধরে রাখতে পারলে এ রোগের ব্যাপকতা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
এটি বেগুনের ঢলে পড়া রোগ। রোগটি ছত্রাক বা
ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে হতে পারে। এ রোগ প্রতিহত করার জন্য সুনিষ্কাশিত
অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে বীজতলা তৈরি করতে হবে। সুস্থ গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ
করতে হবে। বপনের আগে বীজ শোধন করে নিতে হবে। প্রতি কেজি বীজের জন্য
প্রোভেক্স-২০০ অথবা ব্যাভিস্টিন ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
পিএইচের মাত্রা কম হলে জমিতে চুন প্রয়োগ করতে হবে। রোগের আক্রমণ দেখা দিলে
ক্ষেত থেকে রোগাক্রান্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম
হারে ক্যাপটান অথবা ব্যাভিস্টিন মিশিয়ে আক্রান্ত গাছের গোড়ার মাটিতে স্প্রে
করা যেতে পারে। ফসল সংগ্রহের পর ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
একই জমিতে ক্রমাগত মরিচ চাষ করতে থাকলে ঢলে পড়া রোগের আক্রমণ বেশি হয়,
কাজেই এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
দমন ব্যবস্থাপনা
১. বাগানে জন্মানো আগাছা ও অন্যান্য পোষক উদ্ভিদ তুলে বাগান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
২. গ্রীষ্মকালে (বিশেষত সেপ্টেম্বর-অক্টেবর
মাসে) বাগান ভালো করে চাষ দিতে হবে বা পূর্ববর্তী বছরে আক্রান্ত গাছসমূহের
গোড়ার মাটি কোদাল দিয়ে আলগা ও এপিঠ-ওপিঠ করে দিতে হবে যাতে মাটির নিচে
থাকা ডিম উপরে উঠে আসে এবং পাখি ও অন্যান্য শিকারী পোকার কাছে তা উন্মুক্ত
হয়, তাছাড়া রোদে পোকার ডিম নষ্ট হয়ে যায়।
৩. যেহেতু নিম্ফগুলো গাছ বেয়ে ওপরে উঠে তাই
নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ হতেই গাছের গোড়ায় মাটি থেকে ১ মিটার উঁচুতে ৮-১০
ইঞ্চি চওড়া প্লাস্টিকের পিচ্ছিল ব্যান্ড গাছের চতুর্দিকে আবৃত করে দিলে
এরা বার বার ওঠার ব্যর্থ চেষ্টা করে পরিশ্রান্ত হয়ে মারা যায়। অনেক সময়
প্লাস্টিকের পিচ্ছিল ব্যান্ডের নিচের অংশে নিম্ফগুলো জমা হয়। এ অবস্থায়
এদের সহজেই পিটিয়ে বা একসাথে করে আগুনে পুড়িয়ে মারা সম্ভব অথবা জমাকৃত
পোকার উপর কীটনাশক ¯েপ্র করে দমন করা যায়। এসময় নিম্ফগুলোকে গাছে উঠা হতে
নিবৃত করতে পারলে এ পোকার আক্রমণ পুরোপুরিভাবে দমন করা সম্ভব।
৪. যদি কোনো কারণে নিম্ফগুলো গাছ বেয়ে উপরে উঠে যায় তবে শুধুমাত্র গাছের আক্রান্ত অংশে (Spot application) সংস্পর্শ ও পাকস্থলী (Contact and stomach) কীটনাশক
বিধি মোতাবেক প্রয়োগ করা প্রয়োজন। তবে প্রাথমিকভাবে অল্প কিছু পরিমাণ
নিম্ফ গাছ বেয়ে উপরে উঠে গেলে কেবলমাত্র গুঁড়া সাবান মিশ্রিত পানি (প্রতি
লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে) স্প্রে করে এ পোকার আক্রমণ রোধ করা সম্ভব। তবে
ব্যাপকভাবে আক্রমণের ক্ষেত্রে কীটনাশক প্রয়োগের বিকল্প নেই। যেহেতু এ
পোকাটির বহিরাবরণ ওয়াক্সি পাউডার জাতীয় পদার্থ দিয়ে সুরক্ষিত থাকে সেহেতু
পরীক্ষিত কীটনাশক ছাড়া এটি দমন করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে প্রথমে ক্লোরপাইরিফস
(ডারসবান ২০ ইসি বা এ জাতীয় কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ৩ মিলি. হারে) এবং
তার ৩-৪ দিন পর কার্বারাইল (সেভিন ৮৫ এসপি বা এ জাতীয় কীটনাশক প্রতি লিটার
পানিতে ২ গ্রাম হারে) আক্রান্ত অংশে ¯েপ্র করতে হবে। প্রতি ১৫ দিন অন্তর
২-৩ বার এভাবে স্প্রে করলে এ পোকা সম্পূর্ণভাবে দমন করা সম্ভব।
বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা
লক্ষণ:
সাধারণত চারা রোপনের ৪/৫ সপ্তাহের মধ্যেই এ পোকারা আক্রমণ শুরু হতে দেখা
যায় । তবে বেগুন গাছে ফুল আসা শুরু হওয়ার পর আক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকে ।
এই পোকার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে জমিতে সদ্য নেতিয়ে
ডগা চোখে পড়ে । ফল আসার পূর্বে এ পোকার কীড়া কচি ডগায় আক্রমণ করে এবং এর
ভিতরে খেতে থাকে । পরবর্তীতে ফল আসার পর অধিকাংশ কীড়াই কচি ফলে আক্রমণ করে ।
কীড়া কোন কোন সময় ফুলও খেয়ে থাকে । পূর্ণতা প্রাপ্ত হওয়ার পর কীড়া
পুত্তলিতে পরিণত হওয়ার জন্য ফল থেকে সুড়ঙ্গ তৈরী করে মাটিতে নেমে আসে ।
কীড়া বের হওয়ার ছিদ্র ফলে স্পষ্ট দেখা যায় তবে ডগায় এই ছিদ্র পরিলক্ষিত নাও
দেখা যেতে পারে । এ পোকা আক্রমণ শুরু হবার পর থেকে শেষ বার বেগুন সংগ্রহ
পর্যন্ত চলতে থাকে ।
প্রতিকার:
ঋতুভেদে বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণের মাত্রায় ভিন্নতা
দেখা যায় । উঞ এবং আর্দ্র আবহাওয়া এ পোকার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন
করে বলে গ্রীষ্মকালে এ পোকার ব্যাপকা আক্রমণ পরিলক্ষিত হয় । অন্যদিকে
শীতকালে এ পোকার আক্রমণের হার কম থাকে । সেহেতু এ পোকা দমনের ব্যবস্থাপনাও
ঋতুভেদে ভিন্নতর হওয়া বাঞ্চনীয় ।
গ্রীষ্মকালীন ব্যবস্থাপনা:
১. সপ্তাহে অন্ততঃ একবার পোকা আক্রান্ত ডগা ও ফল বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে ।
২. ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারঃ চারা রোপনের ২/৩ সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে । (প্রতি শতাংশে ১টি)
৩. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে জৈব বালাইনাশক, স্পেনোসেড ( ট্রেসার ৪
মিলি./ ১০ লি. পানি হারে ) স্প্রে করতে হবে । গাছের ফুল আসার সময় হতে প্রতি
২ সপ্তাহ অন্তর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে ।
৪. প্রতি ১৫ দিন পর পর উপকারী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ ও ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে ।
৫. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে ভলিয়াম ফ্লাক্সি ৩০০ এসসি প্রতি লিটার
পানিতে ০.৫ মিঃলিঃ হারে বা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সানটাপ ২.৪ গ্রাম/
লি. হারে বা সাইপামেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড বা ফেনকর্ড বা
ম্যাজিক বা কট ০.৫ মিলি./ লি হারে বা ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের কীটমাশক যেমন:
ডেসিস বা ক্র্যাকডাউন ১ মিলি./ লি হরে বা এ পোকার জন্য অন্যান্য অনুমোদিত
রাসায়নিক কীটনাশক ১০-১২ দিন পর পর ৪-৫ বার স্প্রে করতে হবে ।
শীতকালীন ব্যবস্থাপনা:
১. সপ্তাহে অন্ততঃ একবার পোকা আক্রান্ত ডগা ও ফল বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে ।
২. ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারঃ চারা লাগানোর ২/৩ সপ্তাহের সধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে ।
৩. প্রতি সপ্তাহে একবার করে উপকারী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ ও ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে ।
৪. আইপিএম প্রদ্ধতির এলাকাভিত্তিক প্রয়োগ করতে হবে ।
৫. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে জৈব বালাইনাশক, স্পেনোসেড ( ট্রেসার ৪
মিলি./ ১০ লি. পানি হারে ) স্প্রে করতে হবে বা ভলিয়াম ফ্লাক্সি ৩০০ এসসি
প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিঃলিঃ হারে বা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন:
সানটাপ ২.৪ গ্রাম/ লি. হারে বা সাইপামেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড
বা ফেনকর্ড বা ম্যাজিক বা কট ০.৫ মিলি./ লি হারে বা ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের
কীটমাশক যেমন: ডেসিস বা ক্র্যাকডাউন ১ মিলি./ লি হরে বা এ পোকার জন্য
অন্যান্য অনুমোদিত রাসায়নিক কীটনাশক ১০-১২ দিন পর পর ৪-৫ বার স্প্রে করতে
হবে ।
পরবর্তীতে যা যা করবেন না:
১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না
পরবর্তীতে যা যা করবেন:
১. আগাম বীজ বপন করা
২. সুষম সার ব্যবহার করা
৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা
লেবুর ক্যাঙ্কার (Canker) রোগটি জ্যানথোমোনাস সাইট্রি (Xanthomons citri)
নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। এ ব্যাকটেরিয়া রোগাক্রান্ত
গাছের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে এবং নতুনভাবে অন্য গাছকে আক্রমণ করে।
বাতাস ও পানির ছিটার দ্বারা ব্যাকটেরিয়া এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছড়ায়।
ব্যাকটেরিয়া স্টোমাটা ও যে কোন ক্ষতের মাধ্যমে গাছের মধ্যে প্রবেশ করে।
রোগের লক্ষণ●এ রোগে পাতা, আগা ও ফল আক্রান্ত হয়।●প্রথমে কচি পাতায় ছোট ছোট তেলের ফোটার ন্যায় দাগ উৎপন্ন হয়। ●কয়েক দিনের মধ্যে আক্রান্ত স্থান মোটা হয়ে মাঝখানের টিস্যু সাদাটে হয় এবং ফোস্কার মত উচু হয়ে বের হয়ে আসে।●ক্রমে দাগের রং বাদামী ও খসখসে হয়ে যায়। তবে তার কেন্দ্রস্থল একটু নীচু থাকে।●দাগের চারিদিকে হলুদ আভা দ্বারা ঘেরা থাকে।●দাগ পাতার ঊভয় পৃষ্ঠায় দেখা যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাতার উল্টা পৃষ্ঠে বেশী হয় এবং উপরিভাগ খসখসে মনে হয়।●দাগের মধ্যস্থিত টিস্যু খসে পড়ে এবং এর জন্য পাতায় ছোট ছোট ছিদ্রের সৃষ্টি হয়।●ফলের দাগের মুখগহ্বর বেশ পরিস্কার। দাগের চারিপাশে হলুদ আভা থাকে না।●রোগটি কেবল ফলের খোসায় সীমাবদ্ধ থাকে এবং ভিতরের রসালো অংশের বিশেষ কোন ক্ষতি করে না।●ফলের ফলন তেমন কমে না, তবে বাজার মূল্য কমে যায়।রোগের প্রতিকার:●নীরোগ বীজতলার চারা ব্যবহার করতে হবে।●গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতি ঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিতে হবে।●গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।●প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে চিলিটেড জিংক স্প্রে করলে রোগের তীব্রতা কমে যায়।●ট্রাই
ব্যাসিক কপার সালফেট গ্রুপের ঔষধ (যেমন-কিউপ্রোক্স্যাট ৩৪৫ এসসি) প্রতি
লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে
হবে। ●মিউপিরোসিন গ্রুপের ব্যাকটেরিয়ানাশক (যেমন-ব্যাকট্রোবান) ১ লিটার
পানিতে ৪ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।বি:দ্র: ব্যাকট্রোবান ও কিউপ্রোক্স্যাট ৩৪৫ এসসি ঔষধ দুইটি পর্যায়ক্রমে একটা ব্যবহার করার পর আরেকটি ব্যবহার করতে হবে।
ধানে চিটা হওয়ার কারন ঃ ১) ধানের কাইচ
থোড় থেকে ফুল ফোটা পর্যন্ত অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরমের কবলে পড়লে অর্থাৎ
রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সেঃ এর নীচে এবং দিনের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেঃ
এর উপরে হলে ধানে অতিরিক্ত চিটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।২) কাইচ থোড় অবস্থায় কোন কারনে বাধাগ্রস্থ হলে বা স্ত্রী ও পুরুষ ফুলের মধ্যে পরাগায়ন না হলে।৩) ফুল অাসা অবস্থায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় (অতিবর্ষন,অতিখরা,প্রবল বায়ূ প্রবাহ বা প্রচন্ড ঠান্ডা)৪)
মাটিতে সুষম সারের অভাব বিশেষ করে জিপসাম,দস্তা ও বোরনের অভাব হলে ধানে
চিটা হয়ে থাকে। ২০০০ সালে অান্তর্জাতিক ধান গভেষণা ইনস্টিটিউট (IRRI) এর
Nutritional Disorders and Nutrition Management in Rice শিরোনামে গবেষণায়
দেখা যায় ধানের কিছু বায়োকেমিক্যাল প্রসেস যেমনঃ ক্লোরোফিল উৎপাদন,
এনজাইমের সক্রিয়তা এবং মেমব্রেন ইন্টিগ্রিটির জন্য দস্তা অপরিহার্য। ঐ
গবেষণায় আরো দেখা গেছে দস্তার অভাবে কুশি কমে যায়, এমন কি তা পুরোপুরি
বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে দস্তার অভাবে ধানের স্পাইকলেট স্টেরিলিটি (ধানের
চিটা) ও বৃদ্ধি পায়।৫) সীথ ব্লাইট নামক রোগের প্রাদুর্ভাব।৬) কাইচ থোড় থেকে ফুলফোটা পর্যায়ে পানির অভাব হলে।প্রতিকারঃ ১)
সঠিক সময়ে সঠিক বয়সের চারা রোপন বিশেষ করে বোরো মৌসুমে সল্প জীবনকাল
সম্পন্ন জাতগুলো নভেম্বরের শেষের দিকে ( ১৫ই নভেম্বর থেকে ৩০শে নভেম্বর)
বীজতলায় বীজ ফেলতে হবে এবং ৩০শে ডিসেম্বর থেকে ১০ই জানুয়ারীর মধ্যে রোপন
করতে হবে। দীর্ঘ জীবনকাল সম্পন্ন জাতগুলো নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে (
৫- ২৫শে নভেম্বর) বীজতলায় বীজ বপন করতে হবে এবং ২০শে ডিসেম্বর থেকে ১০ই
জানুয়ারীর মধ্যে রোপন করতে হবে। বোরোতে ৪০-৪৫ দিন বয়সের চারা, আউশে
২০-২৫দিন বয়সের চারা এবং আমনে ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা লাগাতে হবে।২) ফটো সেনসেটিভ জাতগুলো পরিহার করে ফটো ইনসেনসেটিভ জাতের চাষ বাড়াতে হবে।৩)
সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। বিশেষ করে জিপসাম, দস্তা ও বোরন সার
ব্যাবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে লিবরেল দস্তা ও লিবরেল বোরন সার ব্যবহার করা
উত্তম।৪) কার্যকরী অাগাছা দমনঃ বোরোতে চারা লাগানোর ৪০-৫০ দিন এবং আউশ ও আমনে ৩০-৪০ দিন পর আগাছা দমনের ব্যবস্থা করতে হবে।৫) কাইচ থোড় থেকে দানা বাঁধা পর্যন্ত মাঠে পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।৬) পোকা মাকড় ও রোগ বালাই দমনে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
ফল ছোট অবস্থায় পচলে হাত দিয়ে পরাগ মিলন ঘটাতে হবে। আর ফল বড় হয়ে পচে গেলে
এবং ফলে বীজ থাকলে ৪ গ্রাম কপার অক্সিক্লোরাইড ৫০ডব্লিউপি যেমন ব্লাইটক্স প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে
হবে। আর যদি ফলে বীজ না থাকে তবে বোরাক্স ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে
স্প্রে করতে হবে।
১। পানি নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। ২। গাছের পরিত্যক্ত অংশ, আগাছা ও আশপাশের ধুতুরা জাতীয় গাছ একত্র করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।৩। প্রতি লিটার পানিতে প্রপিকোনাজলি গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।